প্রতিনিধি ১৬ নভেম্বর ২০২২ , ১:২১:২৪ প্রিন্ট সংস্করণ
রেলের টিকিট নিয়ে যারা কালোবাজারি করছে তাদের কাছ থেকে টিকেট না কিনে তাদের ধরিয়ে দিতে আহ্বান জানিয়েছেন রেলমন্ত্রী মো. নূরুল ইসলাম সুজন।
মঙ্গলবার বিকেলে কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশনে বাংলাদেশ রেলওয়ের ১৬০তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে রেল সেবা সপ্তাহ-২০২২ এর উদ্বোধন ও আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ আহ্বান জানান।
রেলমন্ত্রী বলেন, যাত্রীদের সহযোগিতা ছাড়া রেলের কালোবাজারি পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব নয়। ই-টিকিটিং নিয়ে যারা কালোবাজারি করছে তাদের কাছ থেকে টিকিট না নিয়ে ধরিয়ে দিন। মন্ত্রী বলেন, রেল দিবসকে সামনে রেখে আমরা রেল সপ্তাহ পালন করছি। একটি দেশের উন্নয়ন করতে হলে ভারসাম্যপূর্ণ যোগাযোগ ব্যবস্থা অত্যন্ত জরুরি। প্রধানমন্ত্রী এ লক্ষ্য নিয়েই ২০১১ সালে বাংলাদেশ রেলওয়েকে নতুন জীবন দিয়েছেন। এর আগে রেল কর্মকর্তারা রেল ব্যবস্থাকে যেন ধ্বংস না করা হয় তার জন্য অবস্থান নিয়েছেন। প্রধানমন্ত্রীর সিদ্ধান্তে রেলের নতুন নতুন লাইন বাড়ানো হয়েছে। যমুনা সেতুতে রেল সেতু যুক্ত করা হয়েছে। এতে উত্তরাঞ্চলের সঙ্গে রেল যোগাযোগ বাড়ছে।
তিনি বলেন, আমরা যাত্রীদের রেল সেবা বাড়াতে কাজ করছি। রেলের সব কর্মকর্তা-কর্মচারীকে যাত্রীসেবা বাড়াতে উদ্বুদ্ধ করা হচ্ছে। আমাদের টিকিটিং ব্যবস্থায় কালোবাজারি ছিল। সেগুলো আমরা পরিপূর্ণভাবে এখনো নিয়ন্ত্রণ করতে পারিনি। তবে উদ্যোগ নিয়েছি। ‘টিকিট যার ভ্রমণ তার’- আমরা সে ব্যবস্থা চালু করছি। মন্ত্রী আরও বলেন, প্রতিটি জেলায় রেল সম্প্রসারণ করছি। আমরা চট্টগ্রাম থেকে কক্সবাজার ট্রেনে যেতে পারবো, সে ব্যবস্থাও করছি। তিনি বলেন, রেলের সম্পদ রাষ্ট্রীয় সম্পদ। এটা নষ্ট করবেন না। শুধু রেলের কর্মকর্তারা এটি রক্ষা করতে পারবে না। আপনাদেও এগিয়ে আসতে হবে।
রেলপথ মন্ত্রণালয়ের সচিব ড. মো. হুমায়ুন কবীর বলেন, আগামীতে বাংলাদেশ রেলওয়ের টিকিট ব্যবস্থা উন্নত করা হবে। তিনি বলেন, রেলের যে বিষয়টি নিয়ে সবচেয়ে বেশি অভিযোগ- সেটা হলো টিকিট ব্যবস্থা। তবে, আজকে বেশ কয়েকজন যাত্রীর সঙ্গে কথা বলে এ বিষয়ে কোনো অভিযোগ পাইনি। হুমায়ুন কবীর বলেন, আশাকরছি, আগামী ঈদে রেলের ভ্রমণ আরও সুন্দর হবে। ই-টিকিটিং ব্যবস্থা আরও ভালো হবে। মানুষ সুন্দরভাবে যাতায়াত করতে পারবে। তিনি বলেন, ১০০ জন লোক যদি রেলের টিকিটের জন্য লাইনে দাঁড়ায় তাহলে আমরা ১৮ জনকে টিকিট দিতে পারি। শতকরা ৮২ শতাংশ মানুষকে টিকিট দেওয়া সম্ভব হয়। তবে, টিকিট না পাওয়ার কারণে সমালোচনা হয়। কারণ মানুষ রেলে চড়তে চায়। এ সময় যাত্রীদের সঙ্গে ভালো আচরণ করতে রেলের কর্মকর্তা-কর্মচারীকে নির্দেশনা দেন রেলসচিব।
রেলের যাত্রীদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, যাত্রী হিসেবে প্রত্যেকের দায়িত্ব আছে। রেলের বাথরুমগুলো পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখা প্রত্যেকের দায়িত্ব। এ ছাড়া কেউ যেন রেলের সিটগুলোর কভার ব্লেড দিয়ে না কাটে। এগুলো হলো সাধারণ যাত্রীদের দায়িত্ব। কারণ রেল জনগণের সম্পদ। তিনি বলেন, সচেতনতার জন্য নানা ধরনের লিফলেট তৈরি করা হয়েছে। যাত্রীদের সচেতন করতে দেশের স্টেশনগুলোতে লিফলেট বিতরণ করা হবে। রেল আমাদের সবার সম্পদ। সেবার সঙ্গে সবাই জড়িত। তাই যাত্রীদের সঙ্গে ভালো আচরণসহ সেবার মানসিকতা নিয়ে কাজ করার আহ্বান জানান তিনি। অনুষ্ঠানে ভালো কাজ করার জন্য রেলওয়ের ৩২জন কর্মচারী ও কর্মকর্তাকে পুরস্কার দেওয়া হয়। এ সময় রেল সেবা সপ্তাহ উদ্বোধন ও আলোচনা সভায় বক্তব্য দেন বাংলাদেশ রেলওয়ের মহাপরিচালক ডিএন মজুমদার, ঢাকা বিভাগীয় রেলওয়ে ব্যবস্থাপক মো. সফিকুর রহমান, রেলওয়ে পুলিশের ডিআইজি জয়দেব কুমার ভদ্র প্রমূখ।